সাধারণত কম বৃষ্টি বা খরার কারণে সিলেটে চা উৎপাদন ব্যাহত হয়ে থাকে। এবার চা-বাগানগুলোর ভিন্ন চিত্র। এই সংবেদনশীল পণ্যটির উত্পাদনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে অতিবৃষ্টি। জলবায়ুর প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে এবার দেশে গেলো বছরের তুলনায় দশ মিলিয়ন কেজি চা কম উত্পাদন হয়েছে। অর্থাত্ ২০১৬ সালে দেশে চা উত্পাদন হয়েছিল ৮৫ মিলিয়ন কেজি। যা ছিল দেশে চা শিল্পের ১৬২ বছরের ইতিহাস। কিন্তু ২০১৭ সালে চায়ের উত্পাদন কমে গিয়ে ৭৫ মিলিয়ন কেজি উত্পাদন হয়। অতিবৃষ্টি ও রোদের অভাবে চায়ের কুঁড়ি ঐ ভাবে বাড়েনি।
চা বোর্ডের তথ্যমতে, দেশের ১৬২টি চা বাগানের মধ্যে সিলেটে রয়েছে ১৩৮টি। ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টরের মধ্যে চা চাষ হয় ৫৪ হাজার হেক্টরে। মার্চ থেকে উত্পাদন মৌসুম শুরু হয় ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। গত বছর রেকর্ড পরিমাণ চা উত্পাদন হলেও এবার মৌসুমের শুরুতে অতিবৃষ্টির কারণে উত্পাদন হ্রাস পায়।
বাগান সংশ্লিষ্টরা জানান এবার গত বছরের তুলনায় সিলেটের চা-বাগান এলাকায় ১ হাজার ২শ মিটার বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। অন্যান্য বছর মার্চ-এপ্রিলে স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়। মার্চের বৃষ্টিকে বাগান এলাকায় আশির্বাদ বলে মনে করা হয়। কিন্তু তা না হয়ে মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক নাগারে বৃষ্টি হয়। গেলো চা-উত্পাদন মৌসুমে বাগান এলাকায় মোট ৩ হাজার ৭ শ মি. মিটার বৃষ্টি হয়। এর ফলে বাগান পরিচর্যা ব্যাহত হয়। যথাযথ সার ব্যবহার করা যায়নি। সিলেটের অদূরে খান চা-বাগানে এবার উত্পাদন হয়েছে ৪ লাখ ৬৭ হাজার কেজি। এর আগের বছর সেখানে উত্পাদন হয় ৪ লাখ ৯৮ হাজার কেজি। জাফলং চা বাগানে যেখানে আগের বছর ৪ লাখ ৬ হাজার কেজি উত্পাদন হয়েছিল, সেখানে ২০১৭ সালে ৩ লাখ ৬৫ হাজার কেজি চা-উত্পাদন হয়। সিলেটের একাধিক বাগান ব্যবস্থাপক জানান, অতি বৃষ্টির কারণে অনেক চা গাছ ধ্বংস হয়ে গেছে।