চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান না হলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সমাবেশের অনুমতি দিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘আপনাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দিতে অসুবিধা হলে নয়াপল্টনের সামনে দিন। আমরা সেখানেই সমাবেশ করব।’
মঙ্গলবার বিকালে নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী এই আহ্বান জানান।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। পরে তাকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন তিনি সেখানেই আছেন। মঙ্গলবার উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আপিল করা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে শুনানি হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ২২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় বিএনপি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশের চিন্তা-ভাবনা করেছিল দলটি।
সমাবেশের অনুমতি প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘আমরা এখনো খবর পাইনি। যোগাযোগ করছি। আশা করছি, হয়তো সমাবেশের সুযোগ পাবো।’
রিজভী বলেন, ‘এর আগেও তারা নানাভাবে বিলম্ব করেছে, যেন সমাবেশের ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে না পারি। আমাদের নেতারা গতকাল ডিএমপিতে গিয়েছিলেন।’ তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছি না। তাহলে বাধা দেবেন কেন? আপনাদের যদি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দিতে অসুবিধা হয় তাহলে নয়াপল্টনের সামনে দিন। আমরা সেখানেই সমাবেশ করবো। নেত্রীর মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি পুলিশ দেবে, এটা আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।’
কর্মসূচিতে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পেরেছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘সম্প্রতি আমাদের অনশন, অবস্থান ধর্মঘট ও মানববন্ধন দেখেন। এত যে বাধা, গুলিবর্ষণ, গ্রেপ্তার, বাড়িতে বাড়িতে তাণ্ডব তারপরও মানুষ সমস্ত ভয়ভীতিকে উপেক্ষা করে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন। প্রতিদিন বিএনপির কর্মসূচিগুলোতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়ছে।’
রিজভী আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গতকাল শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। এবারও যদি কোনো দল নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাতেও নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। কোন দল অংশ নেবে, কোন দল নেবে না, সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। আমাদের এ বিষয়ে কিছু করার নেই। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য একটি গণতন্ত্রহীন দেশের প্রধানমন্ত্রীর ভাষা, নির্দয় একনায়কতন্ত্রের ভাষা। জনগণের রাজনৈতিক চেতনা বহুদলীয় গণতন্ত্রের।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এদেশ এখন বহুদলীয় গণতন্ত্রের দেশ নয়। এখানে চলছে প্রতিপক্ষকে বহু-গালাগালি দেয়ার এক অপরিসীম ক্ষমতাধর ব্যক্তির রাজত্ব। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে গোটা জাতিকে হতাশ করেছে, বিক্ষুব্ধ করেছে। তিনি যে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চান না, সেটি জাতির সামনে পরিষ্কার হয়ে গেল। তার কাছে প্রতিপক্ষহীন, বিরোধী দলহীন একতরফা নির্বাচনই সবচাইতে পছন্দ, এর বাইরে তিনি যাবেন না। আর এ কারণেই তিনি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী করার নির্দেশ দিয়েছেন।’