ইবি প্রতিনিধি-
পরিবহন সমস্যা নিয়ে অভিযোগের পাহাড় তুলেছে ইসলামী বিশ্বিবিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অভিযোগে বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবহন ব্যবস্থায় বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার দুপুরে ক্যাম্পাসের ডায়না চত্তরে পরিবহন ব্যবস্থায় গতিশীলতা ও সমস্যা সমাধানের দাবিতে ছাত্র-শিক্ষক উন্মুক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। যৌথভাবে সভাটির আয়োজন করে বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রমৈত্রী ও ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ।
আলোচনায় বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও আসেননি বলে অভিযোগ করেছে আয়োজকরা। চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শফিউল ইসলাম বলেন, ‘পরিবহন নিয়ে শিক্ষার্থীদের সমস্যা সংক্রান্ত আলোচনা সভায় পরিবহন প্রশাসক ও ছাত্র উপদেষ্টা উপস্থিত না থাকা একদম বেমানান। এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
তবে আলোচনায় পরিবহন অফিসের পক্ষ থেকে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন সহকারী রেজিস্ট্্রার জামাল হোসেন। এসময় বিশ^বিদ্যালয়ের বাসের সুপারভাইজার মোঃ আবুল খায়ের উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া শাখা ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি আব্দুর রউফ, ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সভাপতি নুরুন্নবী ইসলাম সবুজ, সাধারণ সম্পাদক জিকে সাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উম্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেয় বিশ^বিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী। এসময় লিখিতভাবে প্রশ্ন ও পরামর্শ নেয়া হয়। এছাড়া প্রশ্ন উত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বন্ধের দিনে পর্যাপ্ত বাস না থাকায় ঠাসাঠাসি করে শিক্ষার্থীদের কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ শহরে যাতায়াত করতে হয়। অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালক ও সহযোগীদের দ্বারা ভাড়া করা বাসগুলো পরিচালিত হয়, ফিটনেস বিহীন অবৈধ গাড়ি ব্যবহার করা হয়, ঝিনাইদহ থেকে আসা ভাড়া গাড়িগুলো রাস্তায় প্রতিযোগীতা করে চলাচল করে। এতে প্রায় সময়ই ছোট ছোট দূর্ঘটনার শিকার হয় শিক্ষার্থীরা।
সমাজকর্ম বিভাগের লাবন্য লাবনী অভিযোগ করে বলেন, বাসে রুট প্লান টানিয়ে দেওয়া না থাকায় বিপাকে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের।’ ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের মোস্তা হাবিবুল ইসলাম বলেন, ‘ড্রাইভার ও হেলপারদের আচরণ খুবই খারাপ। ভাড়া বাসগুলোতে উঠতে গেলে প্রায় সময়ই নিতে চাইনা। তারা বাস ফাঁকা রেখে বিশ^বিদ্যালয়ের বাইরে গিয়ে সাধারণ যাত্রীদের উঠায়। এতে অনেক সময় শিক্ষার্থীদের দাঁড়িয়ে যেতে হয়। হেলপার ভাড়া উঠাতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের নিকটও ভাড়া চেয়ে বসে।’
আব্দুল্লাহ হক নামের এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ঝিনাইদহ রুটের বাসগুলো সময় অনুযায়ী চলে না। রাস্তায় বাইরের যাত্রী উঠাতে গিয়ে দেরীতে পৌঁছাতে হয় আমাদের। অনেক সময় রাস্তার মাঝে নামিয়ে দেয়।’
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিপুল হোসেন খান বলেন, ‘কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ থেকে আসা ভাড়া বাসের অধিকাংশ ড্রাইভাররা অদক্ষ। যার ফলে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।’
এসময় প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী লিখিতভাবে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।
প্রশ্নত্তোর পর্বে পরিবহন অফিসের সহকারী রেজিস্ট্্রার জামাল হোসেন বলেন, ‘আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বিশ^বিদ্যালয়ের সকল বাসে রুট প্লান দেয়া হবে। এছাড়া আগামী জুলাই মাসের পর আর কোন অদক্ষ চালক ও ফিটনেস বিহীন গাড়ি থাকবে না। বাকি সমস্যাগুলোর বিষয়ে আমরা পরিবহন প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের পথ বের করবো।’