ডুমুরিয়া , খুলনা প্রতিনিধি।
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরঘুনা ইউনিয়নের আরশনগরের কৃষক সেলিমুল ইসলাম জানান, মসলার জগতে মৌরি একটি প্রসিদ্ধ নাম। এ বছর প্রায় ৫ বিঘা জমিতে আবাদ করেছি। অল্প দিনের মধ্যেই তিনি কাটা শুরু করবেন। তিনি আশা করছেন এ বছর ফলন ভাল হবে এই ফসলের জন্য সার সেচ কিছুই লাগেনা। বিঘাপ্রতি ৬ থেকে ৮মন মৌরি উৎপাদন হয় এই এলাকায়। যার বাজার মূল্য মন প্রতি ৪০থেকে ৪৫হাজার টাকা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে জানা যায়, জমির কার্যকারিতা বাড়ানাের জন্য এলােমেলাে ব্লক নকশা ব্যবহার করে বাঁধাকপি, ফুলকপি ও অন্যান্য ফসলের সাথে সাথী ফসল হিসাবে মৌরি চাষ করা লাভজনক। মৌরি একটি মশলা এবং ঔষধি গাছ যা সেচ ছাড়াই ভাল জন্মায়। এই গাছের পাতা, বীজ, কন্দ, শিকড় কোনাে কিছুই ফেলনা নয়। বর্তমানে মৌরির কন্দ ইউরােপে সর্বাধিক জনপ্রিয়। বীজ সাধারণত সারা বিশ্বজুড়ে মশলা হিসেবে পাওয়া যায়। মৌরি ও তার কন্দ আকর্ষণীয় সুঘ্রাণ এবং স্বাদের জন্য আধুনিক সময়ের রান্নাঘরে তার জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বের বাজ| দেশ। আমাদের। দেশে এর ফল বা বীজ মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ধরনের মাছ-মাংসের তরকারি, আচার, পিঠা, নানা ধরনের মিষ্টি খাবারে মৌরি ব্যবহৃত হয়, পান মসলা হিসেবে ও খুব জনপ্রিয় এর ঔষধি গুণেরও তুলনা নাই। ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মাে: মোছাদ্দেক হোসেন বলেন,খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মৌরি চাষ। উচ্চমূল্যের মশলাদার ফসলের মধ্যে একটি হলাে মৌরি। এটা আমাদের দেশের একটি বহুল পরিচিত সুগন্ধযুক্ত মসলা, দৈনন্দিন রান্নার অনেকখানি জুড়ে আছে। পাঁচ ফোঁড়নের এক ফোঁড়ন মৌরি। বহুগুণে গুণান্বিত এই মসলা। এতে প্রচুর পরিমানে ঔষধি গুণও বিদ্যমান রয়েছে। মৌরি। গাছকে প্রকৃতির ঔষধি গাছও বলা হয়ে গাকে। খুলনা জেলার। ডুমুরিয়া উপজেলার কৃষকরা উচ্চ চাহিদা এবং ভাল বাজার মুল্যের জন্য মৌরি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। তাদের ক্ষেত ভরে এখন মৌরি ফুলের দৃষ্টনন্দন দৃশ্য আর ঘ্রাণ বাতাসে ভাসছে। মৌরির আরাে অনেক নাম রয়েছে অঞ্চল ভেদে।
আমাদের দেশের বিভিন্ন এলাকায়ও ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকা হয় যেমন গুয়ামুরি, মহুরি ইত্যাদি। মৌরি গাছ এবং ফুল দেখতে বেশ দুই থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে, ফুল দেখতে অনেকটা খােলা ছাতার মতো। সাধারণত ফুলের রঙ হলুদ আর শাদা হয়ে সারি থাকে। পাতাগুলো চিরল, মসৃণ এবং পাখির পালকের মতো হয়েছে। কৃষকরা ফুলকপি বাঁধাকপি খেতে ১.৫ হাত দূরত্বে দেখতে। মুরগির সুস্বাদু কন্দ এবং চিরল পাতা বাগানের শোভা করে সেচ সার ব্যতীত মৌরি চাষ করে অতিরিক্ত সুবিধা পেতে বৃদ্ধি করে ভেষজ হিসেবে। এর সুমিষ্ট এবং সুগন্ধি যুক্ত গ্রাণের জন্য পুরাে বিশ্বে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে রান্নার মসলা হিসেবে। এর চাষের জন্য বেলে, বেলে দো-আঁশ মাটি ভালাে। জমি একটু উচু সুনিষ্কাশিত হলে ভালাে চাষের উপযােগী হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অনেক কৃষক এই মশলা চাষ করে নিয়মিত ফসলের পরিমানে আছে। এতে আরাে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাশাপাশি আয় বৃদ্ধি করেছেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে এই উচ্চ মুল্যের ফসলের উৎপাদন ভাল হওয়ায় কৃষকরা বাঁধাকপি এবং ফুলকপির সাথে সাথী ফসল হিসাবে মৌরি চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এখন বেশিরভাগ গ্রামের উদ্যান এবং শাকসজির ক্ষেতের পাশাপাশি অন্য মৌসুমে বাণিজ্যিকভাবে প্রায় ২৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। ফসলের সাথেও দেখা যাচ্ছে মৌরি গাছের অপরূপ দৃশ্য। মৌরি চাষ করে এলাকার অনেক মানুষ উপকৃত হচ্ছেন বলে জানান আকর্ষণীয়। এই গাছ মােসাদ্দেক হােসেন জানান, উর্বর মাটি ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এই এলাকা মৌরি মশলার চাষ ভাল হয়। স্বল্প সময়ের মধ্যে এই লাভজনক উচ্চমূল্যের ফসল চাষে কৃষকদের আগ্রহ পারেন। খনিজ লবণ সমৃদ্ধ বীজ মৌরি, ঔষধি এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে সােডিয়াম, আয়রণ, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম, কপার, জিঙ্ক, তামা, ভিটামিন এ, সি, ই এবং ভিটামিন বি প্রচুর ফ্ল্যাভনয়েড। মৌরি আঁশ সমৃদ্ধ, এটা বিভিন্ন রােগে পথ্য হিসাবে ব্যবহার হয়ে থাকে। এছাড়া মৌরি গাছ বাতাস থেকে নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে মাটিতে সংযুক্ত করে মাটির উর্বতা বৃদ্ধি করে। চলতি নভেম্বরের শুরুতে মৌরির আবাদ হয় ।এবং ফেব্রুয়ারীর শেষে ফসল ওঠে।