করোনা ভাইরাস -প্রতিরোধে করণীয় ও চিকিৎসা — ডাঃ সুরভী আক্তার।
করোনা ভাইরাসের কয়েকটি ধরণ তার মধ্যে SARS-CoV-2 একটি যেটা কোভিড-১৯ রোগ সৃষ্টি করে।
করোনা ভাইরাসের লক্ষণ ও উপসর্গ :
১.কমন উপসর্গ : জ্বর, ক্লান্তিবোধ,শুকনো কাশি,শ্বাস কষ্ট ।
২.আন-কমন উপসর্গ : মাথা ব্যাথা, গলা ব্যথা ,গায়ে ব্যাথা, গিটে ব্যাথা, কখনো কখনো ডাইরিয়া,বমি,পেটে ব্যথা ইত্যাদি।
প্রতিরোধে করণীয়:
১. জরুরী প্রয়োজনে বাহিরে বের হলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন এবং মাস্ক,গ্লাভস, সানগ্লাস ব্যবহার করুন।
২. বাহির থেকে ফিরে আসলে অবশ্যই হ্যান্ড ওয়াশ বা সাবান দিয়ে কমপক্ষে ২০ সে: যাবত হাত ধু্য়ে নিন। গোসল করে সমস্ত কাপড় সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৩. সাথে থাকা জিনিস যেমন ঘড়ি, ওয়ালেট, মোবাইল ইত্যাদি হেক্সিসল দিয়ে পরিষ্কার করে নিন।
৪. পেমেন্ট এর ক্ষেত্রে টাকার পরিবর্তে ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ ইত্যাদি ব্যবহারের চেষ্টা করুন। টাকার লেনদেন হলে টাকা স্পর্শ করার পর অবশ্যই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
৫. রোগ প্রতিরোধের শক্তি বাড়াতে পুষ্টিকর খাবার যেমন : দুধ, মাছ ,ডিম,শাক সবজি, ফল (বিশেষ করে টক ফল ) খেতে হবে। মালটি ভিটামিন ও সিভিট ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে।
৬. সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত ব্যয়্যাম করা উচিত (উল্লেখ্য যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ভাল ব্যায়াম )
৭. প্রতিদিন অন্তত ২ বার (ঘুম থেকে উঠে এবং ঘুমানোর আগে) আর বাহিরে বের হলে ঘরে ফিরে অবশ্যই আদা, রসুন, গোল মরিচ, কালজিরা পেষ্ট করে পানির সাথে ফুটিয়ে গরম (যতটুকু গরম সহ্য করা যায়) পানি দিয়ে গারগেল করতে হবে। এত কিছু সম্ভব না হলে অন্ততপক্ষে গরমপানির সাথে একটু লবন মিশিয়ে গারগল করুন ।
৮. দিনে ২/৩ বার আদা ,লং দিয়ে ফুটানো চা, লেবুর রসরস দিয়ে পান করুন ; সম্ভব না হলে শুধু কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস দিয়ে পান করুন।
৯. সবসময় হাল্কা গরম খাবার খান।
১০. প্রতিদিন বাড়িঘর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং প্রয়োজনমত দিনে কয়েকবার সাবান দিয়ে হাত পরিস্কার করুন।
চিকিৎসা :
কোভিড-১৯ এর specific treatment নেই। এর চিকিৎসা symptomatic. অর্থাৎ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে যেসব লক্ষণ -ও উপসর্গ দেখা দেয় তার চিকিৎসা দেয়া হয় । কোভিড-১৯ এর প্রথম দিকের লক্ষণ গুলো সাধারণত সিজনাল flu এর মত, যেটা ঘরে বসেই চিকিৎসা করা সম্ভব। পরবর্তীতে অন্যান্য লক্ষণও দেখা দিতে পারে । তবে শ্বাসকষ্ট হলে হসপিটালে গিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। এজন্য শুধু সর্দি, কাশি, জ্বর হলেই আতংকিত না হয়ে অতি দ্রুত ঘরে বসেই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা শুরু করুন ,যাতে যদি রোগটা করোনা হয় সেটা যেন মারাত্মক না হতে পারে।
এ ব্যপারে কিছু পরামর্শ :
১. প্রতিদিন অন্তত ২ বার (ঘুম থেকে উঠে এবং ঘুমানোর আগে ) আর বাহিরে বের হলে ঘরে ফিরে অবশ্যই আদা, রসুন, গোল মরিচ, কালজিরা পেষ্ট করে পানির সাথে ফুটিয়ে গরম (যতটুকু গরম সহ্য করা যায়) পানি দিয়ে গারগেল করতে হবে।
১. IEDCR এর দেয়া number বা সেচ্ছাসেবী চিকিৎসকদের এবং নিজেদের পরিচিত ডাক্তারদের contact number গুলো সংগ্রহে রাখুন।
২. পূর্বে উল্লেখিত নিয়মে দিনে ৩/৪ বার গারগেল করুন। আদা ,লং ,পানি দিয়ে আগুণে ফুটিয়ে চায়ের সাথে লেবুর রস মিলিয়ে দিনে ৩/৪ বার পান করুন।
৩.যাদের অ্যাজমা আছে তারা prescription দেখে প্রয়োজনীয় ওষুধ, inhaler ঘরে রেখে দিতে পারেন। Dcomit nasal spray বা inhaler চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।যাদের নেবুলাইজার মেশিন ঘরে নেই তারা কিনে রেখে দিতে পারেন। নেবুলাইজেশনের জন্য Iprasol সলিউশন চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করতে পারবেন।
আপনাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে নিচে কিছু ওষুধের নাম ও ডোজ দেয়া হলো যেগুলো এক্ষেত্রে আমরা ব্যবহার করি।
1. Tab. Napa (500) – 6 hourly (adult) , 1/2 to 1 tab (6 yr to 12 yr), Syp. Napa 1 to 2 spoon (1 to 5 yr), 1/2 to 1 spoon (3 month to 12 month, Drop Napa – 0.5 ml (o to 3 month);
2. Tab. Fexo(120)-1 tab daily (adult), 1/2 tab (6 yr to 12 yr), Syp. Fexo 1 spoon once / twice daily (2 to 5 yr), 1/2 spoon once / twice daily (6 month to 2 yr);
3. Tab. Montair (10)- 0nce daily (adult), 5mg-once daily for (6 yr to15 yr), Tab. 4 mg -once daily (1to 5 yrs);
4. Tab. Ceevit (250) 4 tab daily (adult), 2 tab daily (4 to 12 yr), 1 tab daily (1 to 3 yr ), Syrup ceevit – 1 /2 spoon daily (2 month to 1 yr ); 5. কখনও কখনও Antibiotic এর প্রয়োজন হতে পারে-এক্ষেত্রে zimax(Azythromycin) চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে ব্যবহার করা যেতে পারে ।
সর্বশেষে বলবো অবশ্যই সর্বদা আল্লাহর সাহায্য চাওয়ার পাশাপাশি নিয়ম কানুন মেনে চলুন, প্রয়োজনে ডাক্তারদের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন, আর সুস্থ থাকুন। আল্লাহ্ আমাদের সহয় হোন। আমিন ।
– ডাঃ সুরভী আক্তার
চেয়ারম্যান রাশেদিয়া-সোবহানিয়া কল্যাণট্র্যাষ্ট ।