স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় “ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়” । কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের সীমান্তবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়টি বর্তমানে আন্তর্জাতিকীকরণের পথে অগ্রসরমান।
মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন-উর রশিদ আশকারীর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে বা হচ্ছে সেদিকে আজ আলোকপাত করছিনা। আজকে রেখাপাত করছিঃ-
“করোনাকালীন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষক কর্মকান্ড
—————————–————–
প্রথমেই ইবি প্রশাসনকে আন্তরিক ধন্যবাদ,কৃতজ্ঞতা এবং সাধুবাদ জানাচ্ছি করোনাকালীন নানান কর্মকাণ্ডের জন্য। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বৈশ্বিক মহামারী প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে অন্যান্য বিশ্বঃ এর ন্যায় গত ১৮ মার্চ বন্ধ ঘোষণা করা হয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। সারা দেশ যখন লকডাউনের কবলে পতিত হয় আর করোনার বিস্তার বাড়তে থাকে ঠিক সেই ক্ষণটিতে উপাচার্য মহোদয় নানামুখি পরিকল্পনা হাতে নেন।
সর্বপ্রথম করোনার বিস্তার রোধ ও সুরক্ষার জন্য “করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সেল” গঠন করে উপাচার্য বলেন, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সামাজিক দ্বায়বদ্ধতার জায়গা থেকে ইবিতে ‘করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সেল’ গঠন করা হয়েছে। এছাড়া করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজেস্ব ল্যাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করার তড়িৎ সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বিনামূল্যে বিতরন-এর জন্য তৈরিকৃত হ্যান্ড স্যানিটাইজারের গত ২৪ মার্চ শুভ উদ্বোধন করা হয়। ৪ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ হতে পিপিই প্রদান করা হয়।
করোনা প্রতিরোধে জরুরী সেবা সংস্থা চিকিৎসা কেন্দ্র ও নিরাপত্তা রক্ষীদের মাঝে এপ্রোন, মাক্স ও হ্যান্ড গ্লাপ্স(পিপিই) বিতরন করেন। প্রশাসনের আর্থিক সহায়তায় করোনা প্রতিরোধ সেল ও ফলিত রসায়ন বিভাগের উদ্যোগে ক্যাম্পাসের পাশ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় জীবানুনাশক স্প্রে করা হয়।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানবিক মুল্যবোধের জাগ্রত রুপ আমাকে চরমভাবে আলোড়িত করেছে। করোনায় ক্যাম্পাসের ভিতর কর্মরত গরীব ও অসহায়দের মধ্যে এাণ ও নগদ টাকা বিতরণের উদ্দেশ্য মাসিক বেতনের একদিনের বেসিক কর্তনের দুই লক্ষ আটারো হাজার পাঁচশত চার টাকা এবং সহায়ক কর্মচারী সমিতি আশি হাজার নব্বই টাকা ও টেকনিক্যাল সহায়ক কর্মচারী সমিতি নগদ সাতাশ হাজার টাকা হস্তান্তর করেন।
শুধু তাই নয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পলাশ,সাধারন সম্পাদক রাকিব,সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ,আরাফাত,লালন,জয় সহ অনেকেই সংগঠন এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে অসংখ্য অসহায় জনসাধারণের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে এছাড়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বড় ভাই নিজেস্ব ফ্যাক্টরি হতে পিপিই তৈরি করে তা বিতরণের দৃশ্য আমাকে আনন্দ আর আবেগে আপ্লুত করেছে। আমার মনে হয়েছে সত্যি আমি স্বার্থক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট যখন ৮১০ কোটি টাকা ইবির বাজেট তখন মাত্র ১৩৭ কোটি টাকা। অথচ সাহসিকতা আর মানুষিকতায় সুউচ্চ উপাচার্য ড. আশকারী প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে ১৫ লক্ষ টাকা প্রদান করেছেন। ইবির উপাচার্যই সর্বপ্রথম সচেতনতামুলক একাধিক বক্তব্যের ভিডিও প্রকাশ করেন। এবং তিনিই প্রথম কোন উপাচার্য যিনি অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার আহ্বান করেন। তিনি সেশনজোট মুক্তির তাড়না থেকে আইসিটি প্রদর্শিত পথে শিক্ষকদের লাইভে ক্লাস, টিউটোরিয়াল, এ্যাসাইনমেন্ট পরিচালনার আহবান জানান।
ড. আশকারীই প্রথম ভিসি যিনি ২০১৬ সালের ২১ আগষ্ট দায়িত্ব নেবার পর হতে আজ অবধি ক্যাম্পাসে অবস্থিত ভিসির বাংলোয় সার্বক্ষণিক অবস্থান করেন। তারই ধারাবাহিকতায় ক্যাম্পাসে অবস্থানরত শিক্ষক,কর্মকর্তা,কর্মচারী এবং আশেপাশে থাকা শিক্ষার্থীদের মনোবলকে সুদৃঢ় রাখতে এবং অসহায়দের পাশে দাড়াতে করোনাকালীন সময়ে একটি দিনের জন্য উনি ক্যাম্পাস ছেড়ে যাননি। আমি বিশ্বাস করি মাননীয় উপাচার্যের এমন দৃষ্টান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি প্রগাঢ় মমত্ববোধ ও ভালবাসারই বহিঃপ্রকাশ।
সঙ্গত কার্যসম্পাদনের জন্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন ছাত্র হিসাবে অবশ্যই গর্ববোধ করছি।
ভাল থাকুক করোনাময় বিশ্ব,
ভাল থাকুক প্রানের প্রিয় ইবি।
মোঃ জুলফিকার শাহিন টিটু
মানবাধিকার কর্মী ও প্রাক্তন ছাত্র।