কাপ্তাই প্রতিনিধি :
রাঙামাটির জেলার কাপ্তাই উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। সর্বশেষ ২১ জুন প্রাপ্ত রিপোর্টে কাপ্তাইয়ে একদিনে সর্বোচ্চ ১৫ জন করোনা শনাক্ত হয় যার মধ্যে নতুন শনাক্ত হয় ১৩ জন বাকী ২ জনের করোনা ২য় রিপোর্টে পজিটিভ এসেছে বলে জানিয়েছে কাপ্তাই স্বাস্থ্য বিভাগ এর করোনার ফোকাল পারসন ডা: ওমর ফারুক রনি।
পূর্বে শনাক্ত হওয়া ২৯ জন সহ এ নিয়ে কাপ্তাই উপজেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪২ জনে। আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বেশীর ভাগ রয়েছে কাপ্তাই পুলিশ বাহিনীর সদস্য। জনগনের নিরাপত্তা দিতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কাপ্তাই থানার ওসি নাসির উদ্দীন। এইছাড়া আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আরো রয়েছেন কাপ্তাই উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগ এর ১ জন চিকিৎসক, ৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী, ১ জন আনসার সদস্য, কাপ্তাই পিডিবি এলাকার ৪ জন, বড়ইছড়ি এলাকার ৩ জন যুবক, মিশন এলাকার ১ জন যুবক, ২ জন সরকারি কর্মচারী, কেপিএম এলাকার ১ জন মহিলা, রাইখালী ইউপি তে ১ জন। এছাড়াও ৮ জন নৌবাহিনী সদস্য এবং বাকী ১৩ জন ই পুলিশ বাহিনী সদস্য । এ নিয়ে মোট কাপ্তাই উপজেলায় ৪২ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
এর মধ্যে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান রাইখালী ইউপি এলাকার ১ নার্স।
কাপ্তাই থানার ওসি নাসির উদ্দীন জানান, শুরু থেকে কাপ্তাইয়ের প্রতিটি পয়েন্টে ঝুঁকি নিয়ে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন, ফলে এখন আক্রান্তদের মধ্যে পুলিশ সদস্যদের তালিকা দীর্ঘতর হচ্ছে। কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুনায়েত কাউছার জানান, কাপ্তাইয়ের ১৩ জন পুলিশ সদস্য ইতিমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩য় তলায় আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা করানো হচ্ছে এবং বাকীদের নিজস্ব ফাঁড়িতে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি জানান, অধিকাংশ পুলিশ সদস্যদের অবস্থা বর্তমানে ভালো। যদি কারোও অবস্থা অবনতি হয়, তাহলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের বাহিরে পাঠানো হবে।
কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফ আহমেদ রাসেল জানান, শুরু থেকে কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসন কঠোরভাবে মাঠে থেকে সেনাবাহিনী এবং পুলিশ সদস্যদের নিয়ে করোনা সংক্রমণ রোধ করতে পারলেও সরকারি নির্দেশনায় মানুষের জীবন জীবিকার তাগিদে ধীরে ধীরে সব কিছু খুলে দেবার পর হতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
তিনি সকলকে এই মহামারি হতে মুক্ত হবার জন্য সামাজিক দুরত্বে চলাচল এবং মুখে মাস্ক পড়ে চলাচলের অনুরোধ জানান।
কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মফিজুল হক জানান, যে হারে কাপ্তাইয়ে করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এই মু্হুর্তে এই উপজেলার কিছু কিছু এলাকাকে রেড জোনে চিহ্নিত করে লগডাউন না করলে ভবিষ্যৎতে কাপ্তাইয়ের অবস্থা আরোও ভয়াবহ হবে। এদিকে কাপ্তাইয়ের উপজেলা সদর বড়ইছড়ি কর্নফুলি নুরুল হুদা কাদেরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসকে আইসোলেশন সেন্টার হিসাবে গড়ে তোলার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে সোমবার (২২ জুন) হতে প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কাপ্তাই ফোরামের এডমিন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এ আর লিমন।