ফারজানা শারমিন।
গত ১৮ অক্টোবর দুপুর ২ টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশের শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরের কার্গো ভিলেজে যে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ঘটে সে অগ্নিকান্ডে
মানুষ মারা না গেলেও দেশের অর্থনীতির চরম ক্ষতি হয়ে গেছে।
বিমান বন্দরের কার্গো ভিলেজে মোট ক্ষয় ক্ষতির পরিমান ১২ হাজার কোটি টাকা। বিমানবন্দরে এরকম অগ্নিকান্ড কোন নাশকতা কিনা তা নিয়ে তদন্ত চলছে।
কারণ অনেকদিন ধরেই দেশীয় আর্ন্তজাতিক ষড়যন্ত্রকারী, বাংলাদেশের শত্রুরা এদেশকে অস্থিতিশীল অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের দেখানোর জন বহু ষড়যন্ত্র করে আসছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপুর্ন
স্থাপনাসমুহ কেপিআইয়ের উপর , গুরুত্বপুর্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমুহ বা জাতীয় অর্থনীতির সাথে সম্পৃক্ত বিদেশ থেকে আনা কাঁচামাল বা অন্যান্য
আমাদানি পন্য সংশ্লিষ্ট কার্গো ভিলেজে আগুন লাগাকে অনেকেই নাশকতা বলে সন্দেহের চোখে দেখছে।
এজন্য গোয়েন্দা নজরদারী আরো বাড়াতে হবে
যাতে যে কোন নাশকতা রোধ করা যায়। অন্যদিকে কেউ কেউ বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলা বা কাজে গাফিলতির কারনে
বিমানবন্দরের মত অতি গুরুত্বপুর্ন জায়গায় আগুন লেগেছে বলে মনে করছেন। তবে নাশকতা হোক বা দায়িত্বে অবহেলা যারাই দোষী বলে প্রমানিত হবেন সেসব মানুষের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করছি। আশা করি তদন্ত কারী কর্মকর্তারা প্রকৃত অপরাধীদের খুজে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিবেন ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর তথ্যমতে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২,৮২০ মার্কিন ডলার, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একটি সাময়িক হিসাব।
এটি আগের অর্থবছরের তুলনায় $৮২ ডলার বেশি। বাংলাদেশের সামষ্টিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ৩.৯৭%।
বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার আগের বছরের তুলনায় কমে গেছে।ব্যবসার জন্য ঋণের স্বল্পতা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা,ফসলের সঠিক দাম না
পাওয়া , সরকারী ঋণ গ্রহণের প্রবনতা বৃদ্ধি , দ্রব্য মুল্যর উর্ধ্বগতি , বিনিয়োগের স্বল্পতা , শেয়র বাজারে ধস, শিল্পবিমুখ অর্থনৈতিক নীতির কারনে বিগত
৪//৫ বছর ধরে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নতি ব্যাহত হয়ে আসছিল ।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ার, কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে দারিদ্রতা হ্রাসের একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল , কিন্তু শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আমদানিকৃত শিল্প কাঁচামাল পুড়ে বাংলাদেশের বহু ব্যবসায়ীদের যেমন পথে বসিয়েছে , দেউলিয়া বানিয়ে ছেড়েছে তেমনি বাংলাদেশের মত জনসংখ্যা বহুল দেশে নতুন শিল্প কল কারখানা সৃষ্টির , কর্মসংস্থান সৃষ্টির , দারিদ্রতা
দুরীকরনের সুয়োগ বাধাগ্রস্থ হয়েছে। এতে জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বাধাগ্রস্থ হবে সাময়িক কারের জন্য ।
ব্যবসা বানিজ্যের উন্নতি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং সামষ্টিক দেশীয় অর্থনৈতিক উন্নতি তরান্বিত করতে হলে বিমানবন্দরে আগুনের ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও সামষ্টিক
অর্থনৈতিক উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
যেসব ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের তালিকা করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান অনুযায়ী ঋণের ব্যবস্থা করে দিতে হবে যাতে তারা আবার বিনিয়োগ করে মুনাফা করতে পারে।
আমদানি কার্গো ভিলেজে আমদানি-রপ্তানি পন্য না রেখে কিছু দুর সরিয়ে নিরাপত্তা সহকারে পন্য গুদামজাত করতে আরো উন্নতমানের গুদাম নির্মান করতে হবে।
বেসরকারী বিনিয়োগ বাড়াতে ঋণপ্রাপ্তির যত কঠোর আইনকানুন তা সহজ করতে হবে। যেসব আমদানিকৃত পন্যের উপর ইন্স্যুরেন্স করা আছে সেসব ইন্স্যুরেন্সের অর্থ খুব শীঘ্রই ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের দ্রুত ফেরত দিতে হবে যাতে তারা তাদের আর্থিক সমস্যা এবং ব্যবসায়িক ক্ষতি ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠতে পারে।
ইপিজেড, শিল্প কলকারখানা এয়ারপোর্ট সহ রাষ্ট্রীয় কেপিআই রয়েছে এমন জায়গার অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা আরো আধুনিক গতিশীল করতে হবে । অগ্নি নির্বাপনের জন্য আরো উন্নত প্রযুক্তি বিদেশ থেকে ক্রয় করে নিয়ে আসতে হবে যাতে ক্ষয় ক্ষতি কমিয়ে অতি দ্রুত কোথাও আগুন লাগলে আগুন নিভিয়ে ফেলা যায় ।
সর্বোপরি দেশের বেকারত্ব এবং দারিদ্রতা দুর করতে কৃষির পাশাপাশি ব্যবসা বানিজ্য শিল্পায়নকে প্রাধান্য দিয়ে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ এবং স্বল্প মেয়াদী
এবং দীর্ঘমেয়াদের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে। ঋণের সহজলভ্যতা বেসরকারী বিনিয়োগ বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করবে । এতে উৎপাদন বাড়বে , জিডিপি
বাড়বে কর্মসংস্থান বেড়ে দারিদ্রতা কমাবে।