শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ :
শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ কাপ্তাইয়ের দুর্গম ভাল্লুকিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নব নির্মিত ভবনের শুভ উদ্বোধন  কাউখালীতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালিত কাপ্তাই বিজিবি বিপুল পরিমাণ বিদেশী সিগারেট আটক করে সীমান্তে আর একটি মানুষও হত্যা করা যাবে না -মোঃ মোস্তফা আল ইহযায” জন্মস্থান সূত্রে নাগরিকত্ব মামলার যুক্তি শুনতে রাজি সর্বোচ্চ মার্কিন আদালত যুক্তরাষ্ট্রে বিমানবন্দরে যাত্রীদের পোশাক নিয়ে নতুন বিতর্ক মামদানির ক্ষুদ্র ব্যবসা ও এমডাব্লিউবিই কমিটিতে শাহরিয়ার রহমান আনডকুমেন্টেড ইমিগ্র্যান্টদের বিমানযাত্রা পরিহারের পরামর্শ মাদারীপুর মুক্ত দিবস আজ

মুকসুদপুর থানার ওসি মোস্তফা কামালসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ দায়ের বিভিন্ন দপ্তরে

  • আপডেট এর সময় রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ১১ বার পঠিত হয়েছে

 

স্টাফ রিপোর্টারঃ

মিথ্যা মামলা, ঘুষ–দুর্নীতি ও অমানবিক নির্যাতনের শিকার ফারুক মোল্লা”—ছোট ছোট ছয়টি সন্তান নিয়ে দুই স্ত্রীর আর্তনাদে তদন্তের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছে।

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানার ওসি মোস্তফা কামালসহ একাধিক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, মিথ্যা মামলা সৃষ্টি, ক্ষমতার অপব্যবহার, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ফারুক মোল্লার দুই স্ত্রী— রেখা বেগম ও রিতু আক্তার। গত ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে তাঁরা গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ–স্মারকলিপি জমা দেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে—ফারুক মোল্লার বিরুদ্ধে একের পর এক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দিয়ে তাকে জেলহাজতে রেখে অর্থ আদায়ের ভয়াবহ চক্র গড়ে তুলেছে কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য। এবার পরিবার বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে এসেছে এবং ন্যায়বিচারের জন্য জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।
দায়েরকৃত এজহারের বরাতে,মামলা জি/আর–৩৬৮/২৪, মামলা নং ২৪, তারিখ ১৭/০৯/২০২৪—গোপালগঞ্জ সদর থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় ফারুক মোল্লার নাম থাকলেও পরিবারের দাবি—”ফারুক মোল্লাকে একদম অন্যায়ভাবে গভীর রাতে বাসা থেকে তুলে এনে মুকসুদপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মারধর করা হয়।”

পরিবারের অভিযোগ—মামলা গোপালগঞ্জ সদর থানার হলেও, মুকসুদপুর থানার ওসি মোস্তফা কামাল ও ১০–১২ জন পুলিশ সদস্য হঠাৎ বাসায় গিয়ে তাকে আটক করেন। আটক করার পর পুলিশ সদস্যদের মুখে শোনা যায়—“ইউনুস সরকার জানে… কো্ট নিলে জামিন হয়ে যাবে।”

এরপর শুরু হয় ভয়াবহ ঘুষ–বাণিজ্য।১০ লাখ টাকার ঘুষ দাবির অভিযোগ।অভিযোগ অনুযায়ী—ওসি মোস্তফা কামাল জামিন করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ফারুক মোল্লার পরিবার থেকে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন।

ওসির কক্ষে খোদ এসআই শামীম ও ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম উপস্থিত অবস্থায় চার লাখ টাকা নেওয়ার অডিও–ভিডিও প্রমাণ পরিবার গণমাধ্যমের কাছে দিয়েছে। পরিবার জানায়—”৪ লাখের মধ্যে ১ হাজার টাকা কম থাকায় ওসি আমাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেন। পরে ইউপি সদস্য সাইফুল নিজের পকেট থেকে ১ হাজার টাকা ওসিকে দেন।”
পরবর্তীতে থানার ভেতরে তদন্ত ওসির রুমে ওসি শীতল রায়, এসআই সুকান্ত বাউল ও আরও এক কনস্টেবলের সামনে আরও চার লাখ টাকা নেওয়া হয়।
পরিবারের দাবি—সিসিটিভিতেও সেই দৃশ্য থাকার কথা, কিন্তু ওসি ফুটেজ প্রকাশে এড়িয়ে যাচ্ছেন। বাকি ২ লাখসহ মোট ১০ লাখ টাকা প্রদানের পরও জামিন হয়নি,পরিবারের বক্তব্য—
“১০ লাখ দেওয়ার পরও জামিন হয়নি। বরং নতুন নতুন মামলা দেখানো হয়েছে।”

পরিবার ও মানবাধিকার সংগঠনের বলেছে—ফারুক মোল্লার বিরুদ্ধে দায়ের করা বেশ কিছু মামলায় অসামঞ্জস্যতা, প্রমাণের ঘাটতি এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চার্জশিট রয়েছে।
বিশেষ করে মুকসুদপুর থানার জি.আর-১৫৫/২৪ মামলার চার্জশিট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
অভিযোগ—চার্জশিটের প্রস্তুতির সময়সীমা সন্দেহজনকভাবে অস্বাভাবিক রকম দেখা গেছে।
১৫১ ধারায় সাক্ষী–জবানবন্দি দেখানো হলেও—সেটি বাস্তবে দেখা যায়।অর্থ লেনদেনের প্রমাণ, স্থান, সাক্ষীর উপস্থিতি—মধ্যে অসমঞ্জস্যতা দেখা গেছে।

এক মামলায় জামিন নিলে সঙ্গে সঙ্গে অন্য থানা বা পুরনো পেন্ডিং মামলা দিয়ে আবার আটক দেখানো হয়েছে,কিছু ক্ষেত্রে Show arrest(শোন এ্যারেস্ট)ব্যবহার করে জামিন বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে

পরিবারের মানবিক বিপর্যয়—“আমরা ছোট ছোট সন্তানগুলো নিয়ে অনাহারে–অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছি”দুই স্ত্রীর লিখিত অভিযোগে উঠে এসেছে তাদের করুণ অবস্থা—”স্বামী বহু বছর ধরে ফল বিক্রি করে সংসার চালাতেন। প্রতারণা বা কোনো অপকর্মের সাথে তিনি কখনো জড়িত ছিলেন না।”

এ- বিষয় মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) বলেন,”ফারুকের নামে অনেক মামলা–অভিযোগ আছে।”সে আমাদের থানায় লিস্টেড প্রতারক হিসেবে তালিকাভুক্ত।

দুই স্ত্রীর অভিযোগ পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা–ঢাকা থেকে একটি বিশেষ টিম সরেজমিন তদন্ত করে।
তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদনে—ফারুক মোল্লার পরিবার মানবিক সংকটে থানায় ঘুষ–বাণিজ্যের অভিযোগে অসঙ্গতি ফারুকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলোতে অস্বাভাবিকতা এগুলো উল্লেখ করা হয়েছে বলে পরিবার জানায়।

এ বিষয় গোপালগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার বলেন, ফারুক মোল্লা গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে আছে। তার মামলা বর্তমানে বিজ্ঞ আদালত এ বিচারাধীন অবস্থায় আছে, তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, আমারা তদন্তের মাধ্যমে কেউ দোষী হলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

সংবাদটি আপনার স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ